The Bullet Train ‘Glass’ Of Japan To The Mars & Moon:এবার চাঁদে, মঙ্গলে যাবে বুলেট ট্রেন , জাপান তৈরী করতে চলেছে এই অভাবনীয় টেকনোলজি।
জাপানের কাজিমা কন্সট্রাকশনের(Kajima Construction) সহযোগিতায় কিয়োটো ইউনিভার্সিটির (Kyoto University) রিসার্চরা আশা দেখিয়েছেন , যে তারা এক মহাকাশে এক কৃত্তিম আবাস স্থান তৈরী করবে এবং আগামী দিনে তারা চাঁদ এবং মঙ্গলে যাবার জন্য আন্তরগ্রহীয় বুলেট ট্রেন তৈরী করতে চলেছে। মহাকাশ গবেষণার দ্বিতীয় রেস সারা পৃথিবী জুড়ে শুরু হয়ে গেছে ,সম্পতি ২০১৮ সালের ১২ অগস্ট নাসা(NASA) তাদের একটি মহাকাশযান সূর্যের কক্ষপথের কাছে পাঠিয়েছে, যা সূর্যের সবথেকে কাছে পৌঁছাবে এর আগে কোনো মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র এতো কাছে কোনো মহাকাশযানকে পাঠাতে পারেনি ,তাদের এই মিশন টা এখনো চলছে।
নাসার ‘পার্কার সোলার’ (Nasa’s Parker Solar) সূর্যকে খুব কাছ থেকে পরীক্ষা করবে। এর আগে যেসব মহাকাশ যান সূর্যকে পরীক্ষা করার জন্য পাঠানো হয়েছিল তা অত্যাধিক অগ্নিতাপে ধ্বংস হয়ে গেছে বা মাঝপথে ভেঙে পড়েছে কিন্তু পার্কার সেই সব গুলোর থেকে আলাদা ভাবে তৈরী হয়েছে যা অন্য মহাকাশযান গুলোর থেকে ৭ গুন সূর্যের কাছে পৌঁছাবে। ৭ বছর ধরে পার্কার সূর্যকে ২৪ বার প্রদক্ষিন করবে এবং সূর্যের চারপাশে ২৪ বার ঘুরবে ,ঘোরবার সময় সব থেকে কাছের দুরুত্ব হবে ৬২ লক্ষ কিলোমিটার।
গত সপ্তাহে জাপানের একটি প্রেস-কনফারেন্সএ ,এই যৌথ টিমটি তাদের ভবিষৎতের পরিকল্পনার ব্যাপারে একটি বিবৃতি দিয়েছে তারা বলেছে তারা একটি ‘Glass’ নামক থাকার জায়গা তৈরী করছে যেটা পৃথিবীর অনুরূপ হবে ,যেখানে কৃত্তিম ভাবে মার্ধ্যাকর্ষণ শক্তি তৈরী হবে এবং শুন্য ও নিম্ন মার্ধ্যাকর্ষণ পরিবেশে যাতে না বেশি গুলি দুর্বল হয়ে পরে সেই জন্য উপযুক্ত পরিবেশও তৈরী হবে।
মহাকাশে পৌঁছানোর প্রতিযোগিতায় ইতি মধ্যে নাসা সূর্যের কাছে পৌঁছাতে চেষ্টা করছে এবং তার সাথে সাথে চন্দ্রঅভিযানের দিকেও নতুন করে দৃষ্টিপাত করছে তারা ,রাশিয়া এবং চীন যৌথভাবে চাঁদে বসত স্থাপনের কথা ভাবছে ,অন্য দিকে চীন এককভাবে মঙ্গল গ্রহ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দিয়েছে ,এবং সেই দিন আর বেশি দূরে নয় যখন পৃথিবীর বাইরে মানুষ বসবাস করা শুরু করে দেবে।
কিন্তু কয়েক হাজার বছর ধরে মানুষের শরীর পৃথিবীতে বাস করার জন্য অভিযোজিত হয়েছে ,শরীরের মধ্যে যে জল এবং বায়ু চলাচল করে তা পৃথিবীর মার্ধ্যাকর্ষণ শক্তির সাথে নিজেকে স্থির করে ফেলেছে ,পৃথিবীর বাইরে বাস করলে তা হয়তো অনেকের শরীর মানিয়ে নিতে পারবে না সেক্ষেত্রে একটা দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থেকেই যাবে।
‘Glass’ ,চাঁদে এবং মঙ্গলে আর একটি পৃথিবী এই বিংশ শতাব্দীতে মহাকাশচারীদের প্রায়শই মহাশুন্যে যেতে দেখা যায় ,যেখানে পৃথিবীর অপেক্ষা মার্ধ্যাকর্ষণ শক্তি একেবারেই নেই বললেই চলে তাই মানব দেহের পেশি , হাড় এবং দেহের কাঠামোর যে ক্ষমতা তা একেবারেই ব্যবহার হয় না তাই খুব বেশি মহাকাশে থাকলে এগুলির সাধারণ কর্মক্ষম ক্ষমতা কমতে শুরু করে।
এমনকি পৃথিবীর বাইরে বাচ্ছাদের ছোট থেকে বড় করা আরো বিপদজনক হতে পারে ,এমনকি তারা স্বাভাবিক ভাবে না জন্মগ্রহণ করতেও পারে যদিও এবিষয়ে এখনো কোনো গবেষণা করা হয়নি। তাও যদিও পরীক্ষা ছাড়া এই রকম কোনো কিছু করা হয় ,তাহলে দেখা যাবে পৃথিবীতে ফিরলেও তারা নিজের পায়ে এমনকি দাঁড়াতে পারছে না। যদিও এই টিমটি এখনই কিছু এইরকম করতে চলছে না ,তারা বলছে একবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে তারা মঙ্গলে এবং চাঁদে বসবাস করার পদ্ধতি শুরু করতে চলেছে ,তও এই পরীক্ষা সম্পন্ন করতে এখনো ১০০ বছর সময় লাগবে।
কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয় এবং কাজিমা নির্মাণ সংস্থা যৌথ ভাবে ‘The Glass’ বানাবে ,যা মূলত তৈরী হবে একটি শংকুর আকারে যেখানে কৃত্তিম ভাবে মানুষের বাস করার জন্য মার্ধ্যাকর্ষণ শক্তি তৈরী হবে ,মানুষের ঘোরবার জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম ও থাকবে ,সবুজ অঞ্চল ও থাকবে এবং জলাশয় ও নির্মাণ হবে আমাদের পৃথিবীতে যেমন থাকে।
গত সপ্তাহের একটি সাংবাদিক সম্মেলনে তাদের এই পরিকল্পনার একটি গ্রাফিকাল রিপ্রেসেন্টেশন তারা প্রস্তুত করেছে যেখানে দেখা যাচ্ছে একটি বৃহৎ সিলিন্ড্রিক্যাল আকারের মধ্যে তারা একটি কৃত্তিম পৃথিবী তৈরী করেছে যেখানে আকাশ আছে ,জলাশয় আছে ,পার্ক আছে ,পৃথিবীতে বাস করার জন্য যা সুযোগ-সুবিধা থাকে সব কিছুই সেখানে থাকবে।
এটি মূলত একটি উল্টানো শংকুর মতো দেখতে, যা সেন্ট্রিফিউগাল টান তৈরি করতে ঘোরানো হয় পৃথিবীর মতো মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তৈরী করার জন্য। এটি প্রায় ১৩০০ ফুট লম্বা এবং ৩২৮ ফুট ব্যাসার্ধের । ২০৫০ সালের মধ্যে গবেষকরা এটির একটি সরল প্রোটোটাইপ সংস্করণ তৈরি করার আশা করছেন। আসাহি শিম্বুনের মতে, এটি প্রায় এক শতাব্দী ধরে নির্মিত হবে এবং কার্যকর হতে প্রায় ১০০ বছর সময় লাগবে।
যেটির পদার্পন চাঁদের মাটিতে হবে সেটিকে বলা হবে ‘Lunaglass’ এবং মঙ্গলের মাটিতে যেটির পদার্পন হবে সেটির নাম হবে ‘Marsglass । পৃথিবীর মতো পরিবেশ তৈরী করার জন্য পৃথিবীর পরিবেশের যে মূল উপাদান গুলি যেমন মাটি,জল ভৌগোলিক ,জীব, গাছপালা ,পদার্থ এবং রসায়নের উপাদানগুলি কৃত্তিম ভাবে সেখানে প্রতিস্থাপন করা হবে।
হাড়ের ঘনত্ব, পেশী হ্রাস এবং দৃষ্টিশক্তি হ্রাস হয়ে যাওয়া খুব সাধারণ ব্যাপার আর আগে আমরা দেখেছি আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন ( ISS) থেকে ফিরে আসা মহাকাশচারীদের মধ্যে। তাই মহাকাশচারীরা বারবার বলেন , পৃথিবীর বাইরে থাকাকালীন নিয়মিত শরীরচর্চা করতে , এই ভিডিওটিতে সেটিও স্পষ্ট ভাবে দেখানো হয়েছে।
এছাড়াও এই গ্রুপটি রূপকথার কাহিনীর মতো গ্রহগুলির মধ্যে ভ্রমণ করার জন্য একটি স্পেসশিপ তৈরী করছে যা মূলত চলবে একটি ‘Hexatrack’ দিয়ে এবং ভ্রমণ চলাকালীন 1Gravitational ফোর্স তৈরী করবে যাতে করে বেশি দূরত্ব যেতে না কষ্ট হয়।এককথায় বলা যাচ্ছে ,মানব সভ্যতা আর একধাপ এগোতে চলছে ,এতদিন পৃথিবীতে মানুষ তার দাপট দেখিয়েছিলো এখন পৃথিবীর বাইরেও অন্য গ্রহে মানুষ তার দাপট দেখতে চলেছে ,দেখা যাক কতদিনে জাপানের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত রূপ নিতে পারে ?