আমেরিকান পপ গায়ক মাইকেল জ্যাকসন সারা বিশ্বে বিখ্যাত। তার প্রতিভা সম্পর্কে সবাই জানে। তিনি স্টেজ শো যখন করতে উঠতেন ,উত্তেজনায় অডিটোরিয়াম ভোরে যেত। তার অনুরাগীরা তাকে একবার স্পর্শই করার জন্য পাগল হয়ে যেত। মাইকেল ‘কিং অফ পপ (King Of POP)’ নামেও পরিচিত ছিলে। ২৫ জুন, ২০০৯ সালে মাত্র ৫০ বছর বয়সে, মাইকেল হৃদরোগে আক্রান্ত হন এবং মারা যান।
তার মৃত্যু ছিল সত্যি রহস্যের। তিনি ১৫০ বছর বাঁচতে চেয়েছিলেন। সেই জন্য ১২ জন ডাক্তারকে তার বাড়িতে তিনি স্থায়ী ভাবে রেখে দিয়েছিলেন ,যারা মাইকেল এর মাথার চুল থেকে পায়ের নখ অবধি প্রতিদিন পরীক্ষা করতেন। সন্দেহভাজন অবস্থায় মাইকেল জ্যাকসন মারা যান, এরপর তার মৃত্যু নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা শুরু হয়। মাইকেল জ্যাকসন পাঁচ বছর বয়সে তার প্রথম স্টেজ শো করেন ।
1964 সালে, মাইকেল জ্যাকসন তার ভাইদের সাথে ‘দ্য জ্যাকসন-৫ (The Jackson-5)’ গ্রুপে যোগ দেন। এরপর ১৯৭১ সাল থেকে তিনি পপ সঙ্গীতে পা রাখতে শুরু করেন। গত ২৫ জুন ছিল এই লিজেন্ড পপ তারকার মৃত্যুবার্ষিক। আমরা আপনাকে মাইকেল সম্পর্কিত কিছু বিশেষ কথা আজ বলব।
মাইকেল জ্যাকসন আমেরিকার ইন্ডিয়ানাতে ১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। ছোট্ট একটি শহরে জন্ম নেওয়া মাইকেল বিশ্বজুড়ে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন। একটা সময় ছিল যখন ছোট বাচ্ছা থেকে বয়স্ক ব্যাক্তির সবার মুখে মাইকেলের নাম থাকতো । ছোটবেলা থেকেই গান গাওয়ার খুব শখ ছিল তার। গানের প্রতি ভালোবাসার কারণে, তিনি খুব তাড়াতাড়ি গান শিখে ফেলেন ,এবং তার সাথে ব্র্যাক ডান্স থেকে শুরু করে মুনওয়াক ,ব্যাকস্লাইড বিভিন্ন ধরণের নাচে নিজেকে পারদর্শী করে তোলেন।
জ্যাকসন ছিলেন তার পিতামাতার অষ্টম সন্তান। মাইকেল 1982 সালে “থ্রিলার(Thriller Album Michael Jackson)” অ্যালবামের মাধ্যমে তার পরিচিতি তৈরী করেন। এই অ্যালবামটি সারা বিশ্বে খুব বিখ্যাত হয়েছিল। তার এই অ্যালবাম প্রকাশের সাথে সাথে সারা বিশ্ব জুড়ে তার ভক্ত অনুরাগীর সংখ্যা হুহু করে বাড়তে শুরু করেন। এরপর থেকে বিভিন্ন দেশ থেকে আসতে শুরু করেন লাইভ স্টেজ পারফরমেন্স করার জন্য। এরপর তিনি একে একে আর বিভিন্ন অ্যালবাম রিলিজ করতে থাকেন। আরো জনপ্রিয় হতে থাকেন মাইকেল।
কিছু মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, মাইকেল জ্যাকসন ১৫০ বছর বাঁচার আকাঙ্ক্ষা করেছিলেন, যার কারণে তিনি সর্বদা অক্সিজেন বিছানায় ঘুমাতেন এবং কারও সাথে হ্যান্ডশেক করার সময় গ্লাভস ব্যবহার করতেন। শুধু তাই নয়, মানুষের মাঝে যাওয়ার আগে মুখোশ পরে যেতেন।
গান গাওয়ার পাশাপাশি মাইকেল জ্যাকসন তার অস্ত্রোপচারের জন্যও খুব বিখ্যাত ছিলেন। আসলে, মাইকেল জ্যাকসন ছিলেন নিগ্রো (কালো) এবং পরে অস্ত্রোপচারের পর তিনি ধবধবে সাদা হয়েছিলেন। মাইকেল জ্যাকসন বিশ্বের সর্বাধিক পুরস্কার বিজয়ী শিল্পী। তার নামে ২৩ টি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড রয়েছে(Guinness World Records Michael Jackson Have ) ।
মাইকেল জ্যাকসনের ২০২২ সাল অনুযায়ী মোট সম্পত্তির পরিমান $600 Million অর্থাৎ, ভারতীয় মুদ্রায় ৪২০০ কোটি টাকা। তিনি যে বাড়িতে থাকতেন তার নাম “নেভারল্যান্ড রাঞ্চে(নেভারল্যান্ড Ranch)” তিনি “পিটার প্যানের(Peter Pan)” পৌরাণিক দ্বীপের বাড়ির নামে নেভারল্যান্ড রাঞ্চের নাম রেখেছিলেন, যে ছেলেটি রূপকথার গল্পে কখনও বড় হয়নি। মিকেল জ্যাকসনের নির্দেশে, সম্পত্তিটি $ ৩৫ মিলিয়ন একটি বিনোদন কমপ্লেক্সে রূপান্তরিত হয়েছি। যার মধ্যে কি ছিল না ? একটি চিড়িয়াখানা, একটি ট্রেন, একটি ৫0-আসনের থিয়েটারm যার মধ্যে একটি ফেরিস হুইল অন্তর্ভুক্ত বিনোদন পার্ক ও ছিল।
আজ ও মাইকেল অনুরাগীরা সেই কমপ্লেক্সের বাইরে মাইকেলের প্রতি তাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মোমবাতি সহ একাধিক চিঠি লিখে রেখে দিয়ে যায়।