পাহাড়ের যাত্রা মানে উঁচুতে ওঠা ,এবং আপনি যত উঁচুতে উঠবেন অক্সিজেনের মাত্রাও কমতে থাকবে। এবং বাতাসের চাপ কমতে থাকে যত ওপর দিকে উঠতে হয়।আর এই অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়া এবং বাতাসের চাপ কম হওয়ার জন্য মানুষের শরীরে শ্বাস-কষ্ট,মাথা ঘোরা এবং বমি সব কিছু শারীরিক সমস্যা দেখা যায়।
হিমালয়ের কোলে সেই স্বর্গ দেখতে কে না চায়। ভারতবর্ষের উত্তরে কাশ্মীর এবং লেহ-লাদাখ দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলই যেন স্বর্গ। আর এই স্বর্গ দেখতেই পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন লেহ-লাদাখ এ। এই লেহ-লাদাখ পর্যটকদের কাছে কোনো স্বর্গর থেকে কম নয়। এই লাদাখের বিবরণ দিতে গেলে যেন মনে হয় কেউ তুলি দিয়ে এঁকে দিয়েছে এই স্থান গুলি। চারিকে ঘিরে রয়েছে হিমালয়,সাথে ঘন নীল আকাশ,পাহাড়ের চূড়া রয়েছে সাদা বরফে ঢাকা। আর মাঝে মাঝেই পাবেন ঘন নীল জলের হ্রদ। এই সমস্ত দৃশ্য এক জায়গায় দেখতে পাওয়ার নেশায় মানুষ ছুটে চলে সেই লেহ-লাদাখ এর দিকে।
যারা ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন তাদের ভ্রমণের তালিকায় লাদাখ এর নাম থাকবেনা সেটা হতেই পারেনা। এটি দেখি ড্রিম ডেস্টিনেশন বলেও চলে। আর যারা বাইক চালাতে ভালোবাসেন তাদের কাছেও লাদাখের এই আবহাওয়াতে পাহাড়ের মাঝে কালো রাস্তা দিয়ে মোটরবাইক চালানোর অভিজ্ঞতা সারা জীবনের জন্য একটি সম্পদের মতো। কিন্তু আপনি যদি ভাবছেন লাদাখ ঘুরতে যাবেন তাহলে অবশ্যই কিছু তথ্য জেনে যান। কারণ পর্যটকদের শরীরের কথা ভেবে লাদাখ জেলা প্রশাসন কিছু কিছু নিয়ম চালু করছেন।
এই লাদাখে ভ্রমণের জন্য এখন থেকে আরো ২ দিন বেশি সময় লাগতে পারে। একটি নির্দেশিকায় বলা হয়েছে যে সব পর্যটকরা লেহ-লাদাখ ভ্রমণ করতে চাইছেন ভ্রমণের আগে ৪৮ ঘন্টা তাদের একটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। লাদাখের এই শুস্ক এবং ঠান্ডা এলাকায় পর্যটকরা কতটা নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছে ,তারা আদেও কতটা ভ্রমণ করতে পারবে সেই সব দেখার জন্যই এই নিয়ম চালু করা হয়েছে এবং এটিকে বাধ্যতা মূলক করাও হয়েছে। এই নিয়মের উদ্দেশ হলো যে কোনো ধরণের মাউন্টেন সিকনেস কে প্রতিরোধ করেও যাতে পর্যটকরা ভ্রমণ করতে পারেন।
সম্প্রতি লাদাখে ভ্রমণকারীদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে পনেকটাই উঁচুতে অবস্থিত এই লাদাখ। তাই অসুস্থ মানুষদের জন্য লাদাখ এ আসা এবং ঘোরা কোনটিই উপযুক্ত নয়। বিশেষত যারা বিমানে করে ভ্রমণ করে তাদের জন্য এই অসুস্থতা একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এই সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা শুরু হয়। এই আলোচনায় LAHDC জানায় যে লাদাখ এ ভ্রমণের অনেক অসুবিধাও রয়েছে। এই আলোচনায় যোগ দিয়েছিলেন টুরিজম ইন্ডাস্ট্রির কর্ম-কর্তা রাও।
এই বৈঠকে লাদাখে যে সমস্ত পর্যটকরা যান তাদের কথা মাথায় রেখে সেখানে চিকিৎসার অবস্থাগুলিকে যাতে আরো ভালো করা যায় সেদিকেও নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে সফরের সময় পর্যটনকারীদের এই নিয়ম গুলি মেনে চলতে হবে। ভ্রমণের সময় কোনো অসুবিধায় পড়লে কিভাবে তার মোকাবিলা করা হবে সেই নিয়ে একটি প্রচার করা হবে বলেও জানা গেছে।
ভারতবর্ষের শেষ চায়ের দোকান এখানে,দেখে নিন কোন সেই জায়গা
এই নিয়ম করার কারণটি জেনে নেওয়া যাক। আপনি পাহাড়ে যত উচ্চতায় উঠবেন তত আপনার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম হবে। আর সেটিকেই বলা হয় মাউন্টেন সিকনেস। এর ফলে বমি,মাথা ঘোরা,ক্লান্তি সব কিছু দেখা যেতে পারে। এই সবের জন্যই প্রশাসন থেকে কিছু নিয়ম াণ হয়েছে যেগুলি পালন করা বাধ্যতামূলক।এই নিয়মে জানানো হয়েছে যদি কোনো পর্যটক এই পরিবেশে পৌঁছানোর পর ,বিশ্রাম নেওয়ার পরও তার শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে এবং হাইড্রেট রাখতে না পারে ,তাহলে সেই ব্যক্তিকে ভ্রমণ করতে দিতে দেওয়া হবে না অর্থাৎ তার ভ্রমণ বাতিল করা হবে।